জহুরুল ইসলাম, স্টাফ রিপোর্টার:
সিরাজগঞ্জের বেলকুচির ধুকুরিয়াবেড়া ইউনিয়নের খামার উল্লাপাড়া বাজারের সরকারী জায়গা প্রভাবশালীদের দখলে থাকায় সবজি এবং মাছ ব্যবসায়ীরা নিয়মিত হাট ইজাদারের খাজনা পরিশোধ করে আসছে। কিন্তু বাজারের নামে সম্পত্তি থাকা স্বত্যেও দীর্ঘদিন যাবত খামার উল্লাপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঠে ব্যবসা করতে বাদ্য হচ্ছে এমন অভিযোগ করেছে ব্যাবসায়ীরা।
কিন্তু স্কুল মাঠে হাট বাজার লাগার কারনে ছাত্র-ছাত্রীদের পাঠদানসহ খেলাধুলায় নানা ধরনের সমস্যা হওয়ায়, স্কুল কর্তৃপক্ষ মাঠটি দখল মুক্তের চেস্টায় ব্যর্থ হয়ে অবশেষে স্কুল মাঠটি দখলমুক্ত করতে হস্তক্ষেপ কামনা করে উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর লিখিত অভিযোগ দিলে উপজেলা প্রশাসন সবজি ও মাছ বিক্রেতাদের সরিয়ে দিয়ে মাঠটি দখলমুক্ত করে দেয়। দীর্ঘ দিনের প্রত্যাশা পূরন হওয়ায় স্কুল কর্তৃপক্ষ ছাত্র-ছাত্রীসহ এলাকাবাসী উপজেলা নির্বাহী অফিসার আনিসুর রহমানকে ধন্যবাদ জানায়।
এদিকে এলাকাবাসী আরও বলেন, যে ভাবে প্রশাসনের হস্তক্ষেপে সরকারি স্কুল মাঠ দখলমুক্ত করা হয়েছে একই ভাবে খামার উল্লাপাড়া বাজারের সরকারী জায়গা দখলমুক্ত করা হোক এটাই আমাদের দাবি।
এদিকে উচ্ছেদকৃত সবজি বিক্রেতারা বলেন, স্কুল মাঠ দখলমুক্ত ও পরিস্কার থাকবে এটা আমরাও চাই। তবে স্কুলের মাঠ দখল মুক্তের পাশাপাশি বাজারের সরকারী জায়গা দখলমুক্ত করা হলে স্থায়ী যায়গায় বসে ব্যবসার মাধ্যমে ছেলে মেয়ে নিয়ে ভালভাবে সংসার চালাতে পারতাম আমরা। তারা আরও বলেন, আমরা অল্প পুঁজির সবজি ব্যবসায়ী হাট ইজারাদারকে খাজনা দেওয়ার পাশাপাশি ভূয়া সামাজিক সংগঠন “এক টাকার ফাউন্ডেশন” এর পরিচালক ইঞ্জিনিয়ার ওমর ফারুককে নিয়মিত চাঁদা দিতে হয়। চাঁদা না দিলে তার হাতে অত্যাচারিত হতে হয়। তাহলে আমরা কোথায় যাব বলেন।
সবজি ব্যবসায়ীরা আরও বলেন, একমাত্র ওমর ফারুককে দুই তিন মাস ধরে চাঁদার টাকা না দিতে পারায় বহু বছর ধরে স্কুল মাঠে ব্যবসা করে আসলেও স্কুল শিক্ষার্থীদের নিয়ে ওমর ফারুক মানববন্ধন করে। যদি বাজারের সরকারী জায়গা দখলের জন্য মানববন্ধন করে সেখানে আমাদের বসার ব্যবস্থা করতো তাহলে আমরা ব্যবসা করে চলতে পারতাম। আমাদের আর এখন কোথাও বসার ব্যবস্থা নাই। আল্লাহ ওমর ফারুকের বিচার করবেই আমরা গরীব মানুষ।
শুধু সবজি ব্যবসায়ীদের অত্যাচার করেই শান্ত নয় ইঞ্জিনিয়ার ওমর ফারুক। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে খামার উল্লাপাড়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক খোরশেদ আলমকে নিয়েও মিথ্যাচার করে নিজের স্বার্থ হাছিল করতে চান ইঞ্জিনিয়ার ওমর ফারুক। তিনি তার ফেসবুক ওয়ালের পোস্টে লেখেন প্রধান শিক্ষক খোরশেদ আলমকে নাকি সবজি ব্যবসায়ীরা হত্যার হুমকি দেন। এ বিষয়ে প্রধান শিক্ষকের কাছে জানতে চাইলে প্রধান শিক্ষক খোরশেদ আলম বলেন কোন সবজি ব্যবসায়ীরা আমাকে কোন ভাবেই হত্যার হুমকি দেয়নি। আমাকে নিয়ে কেউ কোন বিভ্রান্ত ছড়ালে আমি তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করবো।
চাঁদাবাজি ও অত্যাচারের বিষয়ে ইঞ্জিনিয়ার ওমর ফারুকের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, চাঁদাবাজি ও অত্যাচারের বিষয়টি যদি কেউ প্রমান করতে পারে। তাহলে আমার যে শাস্তি হয় আমি তা মেনে নেবো। কিন্তু ফেসবুকে প্রধান শিক্ষককে নিয়ে বিভ্রান্ত ছড়ানোর বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি এ বিষয়ে এরিয়ে যান।
হাট ইজারাদার সভাপতি আব্দুল জলিলের কাছে সবজি ও মাছ বিক্রেতাদের বাজারে কোথায় যায়গা দিয়েছেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, বাজারের সরকারী জায়গায় ঘর তুলে দখল করার কারনে সবজি ও মাছের বাজারের জায়গা দেওয়া সম্ভব না,তবে উপজেলা প্রশাসন যদি স্কুল মাঠ দখলমুক্তর মতোই বাজারের সরকারী জায়গা দখলমুক্ত করে দেয় তখন হয়তো তাদের স্থায়ী ভাবে বসার কোন জায়গা করে দেওয়া যাবে বলে জানান।
খামার উল্লাপাড়া বাজার দখলমুক্ত বিষয় জানতে চাইলে উপজেলা নির্বাহী অফিসার আনিসুর রহমান বলেন, লিখিত অভিযোগ পেলে সরকারী জায়গা দখলমুক্ত করা হবে বলে জানান।
Leave a Reply